যারাই জিতবে, তারাই খেলবে এশিয়া কাপের ফাইনাল—গুরুত্বপূর্ণ এই সমীকরণের ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে পেরে উঠল না বাংলাদেশ। টসে জেতার পর শুরুর ১০ ওভারে টাইগার পেসাররা চেপে ধরলেও শেষের দিকের ব্যাটারদের দৃঢ়তায় ১৩৬ রানের লড়াই করার মতো লক্ষ্য দেয় পাকিস্তান। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশ থামে ১২৪ রানেই।
১১ রানের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল পাকিস্তান। আগামী রবিবার শিরোপার মঞ্চে মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান। গ্রুপপর্ব ও সুপার ফোরেও এর আগে মুখোমুখি হয়েছিল দল দুইটি। ভারত জেতে সবগুলোতেই।
১৩৬ রানের মামুলি লক্ষ্যে খেলতে নেমে এদিন শুরু থেকেই ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। পারভেজ হোসেন ইমন ‘শূন্য’ রানে আউট হওয়ার পর তিনে নামা তাওহিদ হৃদয় ফেরেন ৫ রান করে। ১৫ বলে ১৮ রান করা সাইফ দলীয় ২৯ রানে ফিরলে জয়ের আশা দেখে পাকিস্তান।
১১ রানের বেশি করতে পারেননি প্রমোশন পেয়ে চারে ব্যাট করতে নামা শেখ মেহেদি হাসান। দৃষ্টিকটূ শটে আউট হয়েছেন তিনি। ২১ বলে ১৬ রান করে সহজ বলে আউট হন নুরুল হাসান সোহানও। একপাশে শামীম হোসেন পাটোয়ারি (২৫ বলে ৩০) কিছুটা আগলে রাখলেও বাকিদের সমর্থন পাননি। ৯ বলে ৫ রান করে বাজেভাবে আউট হন অধিনায়ক জাকের আলি। ব্যাটারদের এমন ব্যর্থতায় ১২৪ রানেই থামে বাংলাদেশ। ১১ রানের জয় পায় পাকিস্তান। শেষদিকে রিশাদ হোসেনের ১১ বলে ১৬ রানের ক্যামিও কেবলই ব্যবধান কমায়।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে এদিন প্রথম দুই ওভারেই দুই উইকেট হারায় পাকিস্তান। তাসকিন আহমেদের করা প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে রিশাদ হোসেনের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাহিবজাদা ফারহান। যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তাসকিনের শততম উইকেট।
দ্বিতীয় ওভারে আবারও উইকেট হারায় পাকিস্তান। এবার আঘাত স্পিনের। শেখ মেহেদি হাসানের বলে সেই রিশাদের হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাইম আইয়ুব। চলমান এশিয়া কাপে যা তার চতুর্থ ‘শূন্য’ রানে আউট হওয়ার ঘটনা। তৃতীয় উইকেটে বিপর্যয় কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে পাকিস্তান। ২৪ রান যোগ করেন ফখর জামান ও সালমান আলি আগা।
প্রথম দুইজনের ক্যাচ নেওয়া রিশাদ এরপর আঘাত হানেন বল হাতে। দলীয় সপ্তম ওভারে ফখর জামানকে (২০ বলে ১৩) তানজিম হাসানের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। এরপর হুসাইন তালাতকেও ফেরান তিনি। ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তান। এরপর বিপদ সামালের চেষ্টা করলেও অধিনায়ক সালমান আলি আগাও টিকতে পারেননি মোস্তাফিজুর রহমানের সামনে। দলীয় ৪৯ রানে ২৩ বলে ১৯ রান করে তিনি ফিরলে মহাবিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান।
পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২৭ রান করা পাকিস্তান ১০ ওভারে করে ৪৬ রান। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারানো পাকিস্তান দলীয় ৭১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায়। ১৩ বলে ১৯ রান করা শাহিন আফ্রিদিকে ফেরান তাসকিন। তার দেখানো পথে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন মোহাম্মদ হারিস আর মোহাম্মদ নওয়াজও। হারিসের ব্যাটে ২৩ বলে ৩১ ও নওয়াজের ব্যাটে আসে ১৫ বলে ২৫ রান। ৯ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থেকে অবদান রাখেন ফাহিম আশরাফও। তাতে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানের লড়াকু পুঁজি পায় পাকিস্তান।
বল হাতে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল তাসকিন। ৪ ওভারে ২৮ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন তিনি। ৪ ওভার বল করে ২ উইকেট নেওয়া রিশাদ খরচ করেন মাত্র ১৮ রান। তাসকিনের সমান ওভার ও রান খরচ করে ২ উইকেট নেন শেখ মেহেদি হাসান। বাকি উইকেটটি মোস্তাফিজের।